Monday, November 1, 2010

শুরু হলো আমার আইডিয়া খাতা

মাথা ভর্তি হয়ে থাকে নতুন নতুন চিন্তা , ভাবনা, কৌশল ও সৃষ্টিশীলতায় । কিন্তু তাকে লিখি না বলে হারিয়ে যেতে থাকে। আবার তাকে মাথা থেকে বের হতে দেই না বলে মাঝে মাঝেই ধুরে ফিরে এসে মাথার ভিতর কামড় দিতে থাকে । তাই ভাবছি , এখন থেকে আর গুছিয়ে লেখার চিন্তা ভাবনা রাখবো না। যা মনে আসে আবোল তাবোল- যাই হোক, তাকে ধরে রাখবো এই ব্লগে।

ভার্চুয়াল স্কুল ও ছাত্র ছাত্রীদের ডাটা ফাইলঃ

যে সব চিন্তা মাথায় ঘুরছে। আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মত করে বাংলাদেশের স্কুল গুলোকে ভার্চুয়াল করা। এখানে প্রতিটা ছাত্রের প্রতিদিনের ক্লাস, বিষয়, পরীক্ষা , ক্লাস ওয়ার্ক, হোম ওয়ার্ক ইত্যাদি সমস্ত কিছু তার একাউন্টে জমা থাকবে। সে কোথাও কোন কাজে যদি ফাঁকি দেয় বা ফেল করে , সাথে সাথে সেইটা লাল পতাকা চিহ্ন দেখাবে এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক, বিভাগ প্রধান, শ্রেনী শিক্ষকের কাছে চলে যাবে। ফলে, একটা ছাত্রের দৈনিক কাজ কর্ম, কিসে ভালো করছে, কিসে দুর্বল তা জানা যাবে। রিপোর্ট কার্ড বলে আলাদা কিছু তৈরী করতে হবে না । মাসের শেষে বা বছর শেষে তার সারা বছরের একটা সারাংশ গ্রাফ, পাই চার্ট ইত্যাদি আকারে দেখিয়ে দেবে। প্রতিদিনের উপস্থিতি, অনুপস্থিতি, অসুখের বিসুখের খবর ও রাখা যাবে। ফলে, এটি একটি পুর্ণাঙ্গ জীবন মনিটরিং টুল হিসেবে কাজ করতে পারে। এই ডাটা ফাইল থেকে শুধু ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকই নয়, দেশের সরকারও উপকার পাবে। যে সব জায়গায় বিদ্যুৎ নেই, সেখানেও ছাত্র ছাত্রীর ফাইল মেইন্টেইন করা উচিৎ। এতে করে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ডাটা কালেকশন ও ডাটা ম্যানেজ করে দেশ চালনায় সুবিধা হবে। এই ফাইল দিয়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা , দেশের ভোটার লিস্ট, জাতীয় পরিচয় পত্র, পুলিশ ভ্যারিফিকেশন , চাকুরী, ব্যবসা, সরকারী সুবিধা , ভিজিএফ কার্ড, ফেয়ার প্রাইস কার্ড, বিভিন্ন কোটা ইত্যাদি অনেক কাজেই লাগানো সম্ভব হবে।

সরকারী বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের ফাইল গুলোকে পরস্পর সমন্বয় করা ঃ


বাংলাদেশে যে তথ্য বা ডাটা সংগ্রহ হয় না , তা নয়। সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থা ( এর ভিতরে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, হু , আই এম এফ , এবং হাজার হাজার এন জি ও আছে) বিভিন্ন সময় তাদের বিভিন্ন কাজে কিংবা প্রজেক্টের জন্য মানুষের তথ্য সংগ্রহ করে । কিছুদিন আগে ভোটার আই ডির জন্য বাংলাদেশের প্রায় ৫-৬ কোটি মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে । ১০ বছর পর পর আদম শুমারি হয়। ৪ বছর পর পর হয় বাংলাদেশ পপুলেশন এন্ড হেলথ সার্ভে । বাংলাদেশে নাকি ২১ হাজারের বেশি এন জি ও কাজ করে। এদের অনেকেই ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে থাকে। তার মানে ২১ হাজার এন জি ও এর কাছেও বিপুল পরিমাণ মানুষের ব্যক্তিগত ও অর্থনৈতিক তথ্য আছে । আবার যারা স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে তাদের কাছে আছে মানুষের স্বাস্থ্যগত তথ্য। ১৫ থেকে ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা , স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা - তথা অর্থনৈতিক, সামাজিক , সাংস্কৃতিক তথ্য সরকারী ভাবে সনগ্রহ করতে যাওয়াটা বিশাল খরচের ব্যাপার । সুতরাং, এই হাজার হাজার সরকারী, প্রাইভেট ও এন জি ও দের কাছে থাকা সমস্ত তথ্য একসাথে সমন্বয় করে কাজটা সম্পন্ন করা যায়।

এর জন্য প্রথমেই প্রত্যেকের জাতীয় পরিচয় পত্র বা নম্বর রেজিস্ট্রেশন করে একটি জাতীয় আই ডি দিতে হবে। এইটা শুধু ১৮ বছরের উপরে মানুষের হলে চলবে না । জন্ম নিবন্ধনের মত এইটা হতে হবে বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষের জন্য। এই জাতীয় আই ডি বা পরিচয় নম্বর দেওয়া হলে এই নম্বরের বিপরীতে তথ্য সংগ্রহ বাধ্যতামূলক করতে হবে। যেই সব এলাকায় বিভিন্ন এন জি ও কাজ করে , তাদের উপরে এই নিয়ম বাধ্যতামূলক করে দেওয়া যায়। কেউ যদি রেজিস্ট্রেশন না করে থাকেন এখনো, ঐ এলাকার এন জি ও - এর দায়িত্ব হবে তাদের খাতককে রেজিস্ট্রেশন করতে সাহায্য করা। তাদের নিজস্ব ঋণ কার্যক্রম বা যে কোন প্রজেক্টের হিসাব নিকাস রাখার জন্য এই জাতীয় পরিচয় নম্বর অনুযায়ী তথ্য সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে।

বাংলাদেশের প্রতিটা স্কুলে জন্ম নিবন্ধনের সার্টিফিকেট ও জাতীয় পরিচয় পত্র দেখিয়ে ভর্তি বাধ্যতামূলক করতে হবে। দেশের সকল ভর্তি পরীক্ষা, পাবলিক পরীক্ষা ( এস এস সি, এইচ এস সি, ভার্সিটি, বি সি এস ইত্যাদি) , চাকুরির পরীক্ষা ইত্যাদির এডমিট কার্ডে ও রেজাল্টে জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর বাধ্যতামূলক করতে হবে। জাতীয় টিকা দিবসে টিকা দেওয়ার জন্য জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধন কাজটি পাশাপাশি করা যায় । এতে করে সরকারী ও বেসরকারী সকল কার্যক্রম সমন্বিত হবে। একটি কার্যক্রমে কোন ভাবে বাদ পড়ে যাওয়া মানুষের জন্য অন্য কার্যক্রমে " ক্যাচ " করা ও নিবন্ধিত হওয়া নিশ্চিত হবে। প্রতিটা কার্যক্রমে মনিটরিং ও এফিশিয়েন্সি বাড়বে। কোথাও তেলা মাথায় তেল আর কোথাও " নাই কিছু নাই" অবস্থা হওয়াটা এড়ানো যাবে। সবচেয়ে বড় কথা দুর্নীতি বন্ধ হবে।

এই সমন্বয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে আগে ভূমি মন্ত্রনালয়, শিক্ষা মন্ত্রনালয় , এন জি ও , স্বাস্থ্য এবং ভোটার ব্যাংক - এর সমন্বয় প্রয়োজন।

খাদ্য সমস্যা বা খাদ্য বন্টনের সমন্বয়হীনতা রোধে জাতীয় সাপ্লাই ও লজিস্টিক চেইন ঃ

প্রায়শই মনে হয় দেশে খাদ্যের নয়, সমন্বয় ও সরবরাহের অভাব। ইথিওপিয়ার দুর্ভিক্ষ এই সমন্বয়হীনতার চরম সাক্ষী। এক দিকে বাম্পার ফলন হয়ে কৃষকের সঠিক দাম না পাওয়া , অন্যদিকে খাদ্যের অভাবে মানুষের পুষ্টিহীনতা , নিরব দুর্ভিক্ষ - এর পেছনে মার্কেট ফেইলিওর একটা বড় কারণ। এই মার্কেট ফেইলিওরের পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ হলো দেশে খাদ্য উৎপাদন, সংগ্রহ, সরবরাহ ও সংরক্ষণের কোনই প্ল্যানিং নেই । যার যেভাবে যা মন চাইছে করছে । আসল চাহিদা কতটুকু তা নির্ধারণ করা এবং সেই চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন করে সঠিক দাম পাওয়া নিশ্চিত করা, বাজার স্থিতিশীল রাখার কোন রকম সংস্কৃতি বাংলাদেশে এখনো গড়ে উঠেনি। ফলে, বাংলাদেশের বাজার এখনো প্রতিক্রিয়াশীল - অবস্থা নির্ভর। সমস্ত অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের মত এইখানেও ঢাকাই দেশের সবচেয়ে বড় ক্রেতা বাজার । এই কারণে , ঢাকার চারিদিকে বৃত্তাকারে একটি সাপ্লাই রিং তৈরী করে পরিবহন যান ও বাহনের আসা যাওয়া নির্ধারণ করা উচিত।

বাকিটা উপরে সূত্র ধরেই করতে হবে।

১। প্রকৃত চাহিদা নির্ধারণ
২। চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন ও আমদানি - রপ্তানির মাত্রা নির্ধারণ
৩। প্রতি বছরের আমদানি, রপ্তানি ও খুচরা বাজারে বিক্রির পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ।
৪। বিগত বছর গুলোর ডাটা এনালাইসিস করে ট্রেন্ড ও ফোরকাস্ট করা।
৫। দেশের বিভিন্ন বাজারে সকল পণ্য সঠিক সময়ে পৌছানোর লজিস্টিক প্লান করা।
৬। সাপ্লাই ও বিক্রির ট্রেন্ড দেখে খাদ্য গুদাম জাত করার প্লান।
৭। ফসল কাটা শুরু হওয়ার আগেই পরিমাণ নির্ধারণ করে বিক্রি, রপ্তানি ও গুদামজাত করণের প্লান।
৮। পচনশীল খাদ্য দ্রব্য সংরক্ষনের জন্য কৃষিপণ্য নির্ভর শিল্প গড়ে তোলা / কুটির শিল্প গড়ে তোলা।

পানির সমস্যা মিটানোর জন্য নতুন নতুন ওয়াটার ট্রিট্মেন্ট প্লানঃ

ঢাকা ওয়াসার মত দেশের ৬৪টা জেলায় পানি সরবরাহের জন্য বৃহৎ শিল্পের আকারে ওয়াটার ট্রিট্মেন্ট প্লান্ট গড়ে তোলা।

2 comments:

Free CV Download said...

Good idea but implementation too much tough…

The eternal optimist said...

Change maker, you are absolutely right. It is almost impossible but we have start at some point, sometime!