Sunday, March 4, 2012

অদ্ভুত রাতের কথা

আবারও একজনের নিরব কষ্টের কথা ছুঁয়ে গেলো। অনেকেই মন খুলে কথা বলতে পারে বলেই নিজেদের একান্ত ব্যক্তিগত দুঃখ গুলো আমাকে বলে যায়। আমি শুনে যাই। অনেক সময়েই কিছু করার থাকে না। এইবারও কিছুই করার ছিলো না। তাই চুপচাপ শুনে গেলাম।

একটা মানুষের গল্প। একটা জীবনের গল্প। অনেক ছোট বেলায় বেরিয়ে পড়েছিলো সে। পড়ালেখার জন্য অন্য কোন দেশে গিয়ে একজন প্রেমিকের পাল্লায় পড়ে বিয়ে, তারপর বাচ্চা। জীবন শুরু না হতেই যেন শেষ হয়ে গেলো। স্বামীর দেশে এসে সংসারে দেখা মিললো ড্রাগ, অশান্তি। তারপর ছাড়াছাড়ি। সেখানে অন্য কারো সাথে পরিচয়, প্রেম। নাহ, ঠিক বিশ্বাস হয়নি । তাই নিজের দেশে ফিরে আসা। পিছু পিছু সেই মানুষটির কাছে আসা, বিয়ে আর তারপর নিজের দেশেই কিছুকাল। পরে দ্বিতীয় মানুষটিকে অগাধ প্রেম আর বিশ্বাসের জোরে তার দেশে যাওয়া। আরেকটি সন্তান। প্রায় এক যুগের সংসার। কিন্তু সুখ আর হলো না। সংসার টিকিয়ে রাখতে শারীরিক, মানসিক নানা অনিয়ম মেনে নিলেও এই এত্তদিন পরে ৩য় কারো আগমন আর সহ্য হচ্ছে না।

সত্যি কি কেউ এসে দাঁড়িয়েছে মাঝে? ভালোবাসার মানুষটি কি শেষ পর্যন্ত পা পিছলাবে? অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়ে গেলো কেউ, অদ্ভুত এক রাতের শেষে।

আমার কাছে নিজের কষ্ট গুলো উজাড় করে দিয়ে সে হয়ত ঘুমিয়ে পড়েছে। আমি খোলা চোখে জেগেই আছি। জীবন এমন কেন?

Thursday, March 24, 2011

আমি পেলাম! আমি ইহাকে পেলাম!

রুনার "সুখ তুমি কি বড় জানতে ইচ্ছে করে " আমার খুব প্রিয় একটা গান। কাল বিকেলে দেখি আব্বু ব্লগে পোস্ট লেখার জন্য খুব কসরৎ করছে। এই বয়সে নতুন করে কম্পিউটার, ই মেইল, ইন্টারনেট, ব্লগ - এসব শেখা যে কি বিরাট ঝক্কি সেইটা আমি আব্বু আম্মুকে শিখাতে গিয়ে টের পেয়েছি। নতুন নতুন টেকনোলজি শিখতে গিয়ে তাঁরা এখন নতুন শিশু আর আমি হয়েছি মা। :)

তো, আব্বু দেখি মহাবিরক্ত! কেন? 'হয়েছে' লিখতে গিয়ে 'য়'-কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কার এত্ত বড় সাহস যে বর্ণমালার 'য়' নিয়ে দিনে দুপুরে চম্পট দিলো! বহুত কষ্টে হাসি চেপে দেখিয়ে দিলাম। আব্বু আগে প্রায় ১০ বছর ধরে বিজয় আর বাংলা কি বোর্ড দিয়ে লিখে অভ্যস্ত। এখন আবার নতুন করে 'অভ্র' আর 'ফোনেটিক' শিখতে হচ্ছে। তো দেখিয়ে দেওয়ার পরে পুরো পাঁচ লাইন বানান করে করে লিখলেন। আর একটু পর পর "আরে! হয়ে গেলো তো!" , "এই তো পেয়েছি", "এইটাও তো হয়ে গেলো", "বাহ! পারছি তো!" - বলে বলে খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠলেন। বাচ্চাদের মতোই কি তার হাসি আর খুশি!

নিজের সমস্ত অতি জরুরী কাজ ফেলে, বসে বসে আব্বুর আনন্দ দেখলাম। পাঁচ লাইন লিখতে লাগলো প্রায় ২০ মিনিট। তারপরেও মনে হলো, সারাটা জীবন যাকে কিছু একটা দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতেই চলে গেলো, তাকে এইটুকু দিতে পেরে 'সুখ' পাখির একটা পালক হয়ত সত্যি সত্যি - "আমি পেলাম! আমি ইহাকে পেলাম!"

http://www.somewhereinblog.net/blog/valobashablog/29322391

অনিশ্চয়তা , আবার ও

সব কিছু কেমন যেন অদ্ভুত. কাজের চাপ এর কারণ তো আছেই. সেইসাথে নানা টেনশন যোগ হয়ে মনটা অস্থির হয়ে থাকছে. অনেক কিছু লিখতে মন চাই. কিন্তু সে সময় কই? এলোমেলো . সব কিছু এলোমেলো. মাঝে মাঝে মনে হয় , আমি আমার ক্যারিয়ার বেছে নিতে বেশ ভুল করেছি. আমার উচিত ছিল সাইকোলজি পড়া. মানুষের কথা শুনতে ভালো লাগে. মানুষের না না রকমের কষ্ট , দুঃখ , সমস্যা এর সমাধান করতে পারলে ভালো লাগে. এমন পেশা দুনিয়াতে নিশ্চয়ই আছে. আমি কেন খুঁজে . বুঝে , সাজিয়ে নিতে পারছি না?

Sunday, January 23, 2011

নতুন করে যুদ্ধ শুরু - নিজের সাথেই নিজে

একটা সময় থাকে, যখন স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। তবে, জীবনের একটা পর্যায়ে এসে উপলব্ধি করছি, স্বাস্থ্য শুধু সুখের মূলই নয়; স্বাস্থ্য , মানে সুস্বাস্থ্য, বেঁচে থাক্র জন্য অপরিহার্য্য। প্রথম যখন জন স্বাস্থ্য নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে শুরু করি, তখন আমার সুপারভাইজর শাহানা আপা বলেছিলেন," দেখো, আমরা যারা জনস্বাস্থ্যকে পেশা হিসেবে নিয়েছি, তাদের জন্য শরীরটাই সব। শরীর ঠিকাছে তো ক্যারিয়ার ঠিক, নইলে সব পন্ড।" আমার জন্য কথা গুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ কারণ খেলাধুলা ছেড়ে দিয়ে ডাক্তারী বিদ্যায় মননিবেশের সাইড ইফেক্ট হিসেবে তখন বেশ মুটিয়ে গিয়েছিলাম। সেই যে আমার উন্নতির শুরু, ওজনের কাঁটা ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখীই হয়েছে। তারপর অনেক প্রকার ডায়েট রেজিম, শরীর চর্চা, খেলায় ফিরতে গিয়ে বিশাল এক ইনজুরি, প্রায় এক বছর পঙ্গুত্বের অভিশাপ যাপন , তারপর স্রেফ মনের জোরে আবার নতুন করে হাঁটতে শেখা- বড় বিচিত্র গত ৫ বছরের পরিক্রমা।

গেলো সপ্তাহ থেকে নতুন করে শুরু করলাম ডায়েট। এর ভেতর, ২০০৮ এর পর বসে বসে কাজ করে ওজন বেড়েছে প্রচুর। তবে, সবটাই নেতিবাচক গল্প নয়। এর ভিতর নিজের শরীরকে চেনা হয়েছে। বিভিন্ন গবেষণা পড়া ও দেখা হয়েছে। ধীরে ধীরে বুঝতে শিখেছি যে " সব ডায়েট সবার জন্য নয়।" আবার , ডায়েটের সাথে কতটুকু ক্যালরি পোড়াতে হবে এবং সেইটা ঠিক কি ধরনের কসরতের মাধ্যমে, সেটাও এক এক জনের জন্য এক এক রকম। তাই সুস্বাস্থ্য পেতে সবার আগে চাই নিজের শরীরটাকে ভালো ভাবে চিনে নেওয়া। আমার জন্য শুরু ডায়েট বা শরীর চর্চা কাজ করবে না। দুটোর একটা ভারসাম্য ঠিক করে মেনে চলতে হবে সারা বছর- মানে বাকি জীবনের সবটাই।

এখন চলছে শুধু ডায়েট। মাস দুয়েক পর থেকে শুরু হবে শারীরিক কসরৎ। সপ্তাহে ৬ দিন শুধু সবজি আর সালাদ খাই। সাথে দই, ডাল, বাদাম আর মাছ। মাছ বেশির ভাগই সবজির সাথে মিশিয়ে। এর মধ্যে দু'দিন রাতের খাবারে যোগ হয় মাছ অথবা মুরগী (একদিন মাছ, একদিন মুরগী) আলাদা তরকারী হিসেবে। ৭ম দিন এক বেলা ভাত। ভাতের সাথে বাংলাদেশী তরকারির মত করে রান্না করা মুরগী বা মাছ। অন্যান্য দিন তেল ছাড়া রান্না করি, ছুটির দিনটা তেলসহ ভুনা হয়। সাথে নানা রকম ভর্তা। কোন কোন দিন সবজির স্যুপ থাকে। আর প্রতিদিন সকালে একটা রুটির সাথে একটা তেলবিহীন ডিম পোচ। তিন লিটার তরল পানের জন্য দিনমান ধরে চিনিবিহীন লিকার চা চলতে থাকে। সকালের চায়ে দু চামচ লেবুর রস আর মধু। ভালোই চলছে আমাদের সম্পূর্ণ সবুজ ডায়েট।

প্রায় ৩০ কেজি ওজন কমাতে হবে। মুখের কথা নয়। দেখা যাক কি হয়।

Wednesday, November 3, 2010

জমজমাট ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসা

জমজমাট ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসা নাজমুল আলম শিশির
দারিদ্র্য বিমোচনের নামে বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসা এখন জমজমাট। গত কয়েক বছর দেশের ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঋণগ্রহীতার সংখ্যাও। বর্তমানে ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব নয় বলে জানান অর্থনীতিবিদসহ সংশ্লিষ্টরা।
অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০১০ অনুযায়ী, গ্রামীণ ব্যাংকসহ বৃহৎ ২১টি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) মাধ্যমে বর্তমানে ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতার সংখ্যা দুই কোটি ৪২ লাখ ৬০ হাজার। আর পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতার সংখ্যা ৮৪ লাখ ১৬ হাজার জন। আর সরকার পরিচালিত চারটি ব্যাংকের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণকারীর সংখ্যা এক কোটি ১৮ লাখ ৬৮ হাজার ৬৮৪ জন। অন্যান্য বাণিজ্যিক এবং বিশেষায়িত ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ গ্রাহকের সংখ্যা ১৭ লাখ ৯৮ হাজার ৩৪৭ জন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতা আছেন আরো কয়েক লাখ।
পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ কালের কণ্ঠকে বলেন, শুরুতে ক্ষুদ্রঋণের যে উদ্দেশ্য ছিল তা বাস্তবায়িত হয়নি। এখন সময় এসেছে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ক্ষুদ্রঋণের বেড়াজাল থেকে বের হয়ে আসার। একদিকে যেমন বাড়ছে ঋণগ্রহীতার সংখা তেমনিভাবে বাড়ছে ঋণ বিতরণের পরিমাণ। অর্থনৈতিক সমীক্ষায় থেকে দেখা যায়, কেবল পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) তার ২৫৭টি সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে ২০১০ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত সাত হাজার সাত কোটি ৪৩ লাখ টাকা ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ করেছে। এ ছাড়া পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন (পিডিবিএফ) ২০০৯-২০১০ অর্থবছরের মার্চ মাস পর্যন্ত ৩৭৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। গ্রামীণ ব্যাংকসহ দেশের বৃহৎ ২১টি বেসরকারি সংস্থাসমূহ (এনজিও) ২০০৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সর্বমোট ৭৩ হাজার ২৩২ কোটি ৩৬ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ বিতরণের পরিমাণ ৪৩ হাজার ৭০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। 'ব্র্যাক' ২০০৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪৩ হাজার ৭০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, 'আশা' ৩৪ হাজার ২৫১ কোটি, 'প্রশিকা' চার হাজার ৩২৫ কোটি, 'শক্তি ফাউন্ডেশন' এক হাজার ৫৬৯ কোটি ৯৮ লাখ, 'টিএমএসএস' তিন হাজার ৪৬৩ কোটি ২২ লাখ, 'সোসাইটি ফর সোশ্যাল সার্ভিসেস (এসএসএস)' দুই হাজার ১০০ কোটি ৪২ লাখ, 'স্বনির্ভর বাংলাদেশ' ৮৮৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ক্ষুদ্রঋণে সুদের হার অনেক বেশি। এই উচ্চ সুদহার কমানোর ওপর জোর দিতে হবে। সেই সঙ্গে নতুন প্রজন্মকে প্রযুক্তি, কুটির শিল্প এবং বিদেশে শ্রমবাজারে প্রবেশসহ নতুন নতুন বিষয়ের উন্নয়নে নজর দিতে হবে।

http://www.dailykalerkantho.com/?view=details&type=gold&data=Study&pub_no=331&cat_id=1&menu_id=24&news_type_id=1&index=1

Monday, November 1, 2010

শুরু হলো আমার আইডিয়া খাতা

মাথা ভর্তি হয়ে থাকে নতুন নতুন চিন্তা , ভাবনা, কৌশল ও সৃষ্টিশীলতায় । কিন্তু তাকে লিখি না বলে হারিয়ে যেতে থাকে। আবার তাকে মাথা থেকে বের হতে দেই না বলে মাঝে মাঝেই ধুরে ফিরে এসে মাথার ভিতর কামড় দিতে থাকে । তাই ভাবছি , এখন থেকে আর গুছিয়ে লেখার চিন্তা ভাবনা রাখবো না। যা মনে আসে আবোল তাবোল- যাই হোক, তাকে ধরে রাখবো এই ব্লগে।

ভার্চুয়াল স্কুল ও ছাত্র ছাত্রীদের ডাটা ফাইলঃ

যে সব চিন্তা মাথায় ঘুরছে। আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মত করে বাংলাদেশের স্কুল গুলোকে ভার্চুয়াল করা। এখানে প্রতিটা ছাত্রের প্রতিদিনের ক্লাস, বিষয়, পরীক্ষা , ক্লাস ওয়ার্ক, হোম ওয়ার্ক ইত্যাদি সমস্ত কিছু তার একাউন্টে জমা থাকবে। সে কোথাও কোন কাজে যদি ফাঁকি দেয় বা ফেল করে , সাথে সাথে সেইটা লাল পতাকা চিহ্ন দেখাবে এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক, বিভাগ প্রধান, শ্রেনী শিক্ষকের কাছে চলে যাবে। ফলে, একটা ছাত্রের দৈনিক কাজ কর্ম, কিসে ভালো করছে, কিসে দুর্বল তা জানা যাবে। রিপোর্ট কার্ড বলে আলাদা কিছু তৈরী করতে হবে না । মাসের শেষে বা বছর শেষে তার সারা বছরের একটা সারাংশ গ্রাফ, পাই চার্ট ইত্যাদি আকারে দেখিয়ে দেবে। প্রতিদিনের উপস্থিতি, অনুপস্থিতি, অসুখের বিসুখের খবর ও রাখা যাবে। ফলে, এটি একটি পুর্ণাঙ্গ জীবন মনিটরিং টুল হিসেবে কাজ করতে পারে। এই ডাটা ফাইল থেকে শুধু ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকই নয়, দেশের সরকারও উপকার পাবে। যে সব জায়গায় বিদ্যুৎ নেই, সেখানেও ছাত্র ছাত্রীর ফাইল মেইন্টেইন করা উচিৎ। এতে করে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ডাটা কালেকশন ও ডাটা ম্যানেজ করে দেশ চালনায় সুবিধা হবে। এই ফাইল দিয়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা , দেশের ভোটার লিস্ট, জাতীয় পরিচয় পত্র, পুলিশ ভ্যারিফিকেশন , চাকুরী, ব্যবসা, সরকারী সুবিধা , ভিজিএফ কার্ড, ফেয়ার প্রাইস কার্ড, বিভিন্ন কোটা ইত্যাদি অনেক কাজেই লাগানো সম্ভব হবে।

সরকারী বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের ফাইল গুলোকে পরস্পর সমন্বয় করা ঃ


বাংলাদেশে যে তথ্য বা ডাটা সংগ্রহ হয় না , তা নয়। সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থা ( এর ভিতরে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, হু , আই এম এফ , এবং হাজার হাজার এন জি ও আছে) বিভিন্ন সময় তাদের বিভিন্ন কাজে কিংবা প্রজেক্টের জন্য মানুষের তথ্য সংগ্রহ করে । কিছুদিন আগে ভোটার আই ডির জন্য বাংলাদেশের প্রায় ৫-৬ কোটি মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে । ১০ বছর পর পর আদম শুমারি হয়। ৪ বছর পর পর হয় বাংলাদেশ পপুলেশন এন্ড হেলথ সার্ভে । বাংলাদেশে নাকি ২১ হাজারের বেশি এন জি ও কাজ করে। এদের অনেকেই ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে থাকে। তার মানে ২১ হাজার এন জি ও এর কাছেও বিপুল পরিমাণ মানুষের ব্যক্তিগত ও অর্থনৈতিক তথ্য আছে । আবার যারা স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে তাদের কাছে আছে মানুষের স্বাস্থ্যগত তথ্য। ১৫ থেকে ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা , স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা - তথা অর্থনৈতিক, সামাজিক , সাংস্কৃতিক তথ্য সরকারী ভাবে সনগ্রহ করতে যাওয়াটা বিশাল খরচের ব্যাপার । সুতরাং, এই হাজার হাজার সরকারী, প্রাইভেট ও এন জি ও দের কাছে থাকা সমস্ত তথ্য একসাথে সমন্বয় করে কাজটা সম্পন্ন করা যায়।

এর জন্য প্রথমেই প্রত্যেকের জাতীয় পরিচয় পত্র বা নম্বর রেজিস্ট্রেশন করে একটি জাতীয় আই ডি দিতে হবে। এইটা শুধু ১৮ বছরের উপরে মানুষের হলে চলবে না । জন্ম নিবন্ধনের মত এইটা হতে হবে বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষের জন্য। এই জাতীয় আই ডি বা পরিচয় নম্বর দেওয়া হলে এই নম্বরের বিপরীতে তথ্য সংগ্রহ বাধ্যতামূলক করতে হবে। যেই সব এলাকায় বিভিন্ন এন জি ও কাজ করে , তাদের উপরে এই নিয়ম বাধ্যতামূলক করে দেওয়া যায়। কেউ যদি রেজিস্ট্রেশন না করে থাকেন এখনো, ঐ এলাকার এন জি ও - এর দায়িত্ব হবে তাদের খাতককে রেজিস্ট্রেশন করতে সাহায্য করা। তাদের নিজস্ব ঋণ কার্যক্রম বা যে কোন প্রজেক্টের হিসাব নিকাস রাখার জন্য এই জাতীয় পরিচয় নম্বর অনুযায়ী তথ্য সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে।

বাংলাদেশের প্রতিটা স্কুলে জন্ম নিবন্ধনের সার্টিফিকেট ও জাতীয় পরিচয় পত্র দেখিয়ে ভর্তি বাধ্যতামূলক করতে হবে। দেশের সকল ভর্তি পরীক্ষা, পাবলিক পরীক্ষা ( এস এস সি, এইচ এস সি, ভার্সিটি, বি সি এস ইত্যাদি) , চাকুরির পরীক্ষা ইত্যাদির এডমিট কার্ডে ও রেজাল্টে জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর বাধ্যতামূলক করতে হবে। জাতীয় টিকা দিবসে টিকা দেওয়ার জন্য জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধন কাজটি পাশাপাশি করা যায় । এতে করে সরকারী ও বেসরকারী সকল কার্যক্রম সমন্বিত হবে। একটি কার্যক্রমে কোন ভাবে বাদ পড়ে যাওয়া মানুষের জন্য অন্য কার্যক্রমে " ক্যাচ " করা ও নিবন্ধিত হওয়া নিশ্চিত হবে। প্রতিটা কার্যক্রমে মনিটরিং ও এফিশিয়েন্সি বাড়বে। কোথাও তেলা মাথায় তেল আর কোথাও " নাই কিছু নাই" অবস্থা হওয়াটা এড়ানো যাবে। সবচেয়ে বড় কথা দুর্নীতি বন্ধ হবে।

এই সমন্বয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে আগে ভূমি মন্ত্রনালয়, শিক্ষা মন্ত্রনালয় , এন জি ও , স্বাস্থ্য এবং ভোটার ব্যাংক - এর সমন্বয় প্রয়োজন।

খাদ্য সমস্যা বা খাদ্য বন্টনের সমন্বয়হীনতা রোধে জাতীয় সাপ্লাই ও লজিস্টিক চেইন ঃ

প্রায়শই মনে হয় দেশে খাদ্যের নয়, সমন্বয় ও সরবরাহের অভাব। ইথিওপিয়ার দুর্ভিক্ষ এই সমন্বয়হীনতার চরম সাক্ষী। এক দিকে বাম্পার ফলন হয়ে কৃষকের সঠিক দাম না পাওয়া , অন্যদিকে খাদ্যের অভাবে মানুষের পুষ্টিহীনতা , নিরব দুর্ভিক্ষ - এর পেছনে মার্কেট ফেইলিওর একটা বড় কারণ। এই মার্কেট ফেইলিওরের পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ হলো দেশে খাদ্য উৎপাদন, সংগ্রহ, সরবরাহ ও সংরক্ষণের কোনই প্ল্যানিং নেই । যার যেভাবে যা মন চাইছে করছে । আসল চাহিদা কতটুকু তা নির্ধারণ করা এবং সেই চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন করে সঠিক দাম পাওয়া নিশ্চিত করা, বাজার স্থিতিশীল রাখার কোন রকম সংস্কৃতি বাংলাদেশে এখনো গড়ে উঠেনি। ফলে, বাংলাদেশের বাজার এখনো প্রতিক্রিয়াশীল - অবস্থা নির্ভর। সমস্ত অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের মত এইখানেও ঢাকাই দেশের সবচেয়ে বড় ক্রেতা বাজার । এই কারণে , ঢাকার চারিদিকে বৃত্তাকারে একটি সাপ্লাই রিং তৈরী করে পরিবহন যান ও বাহনের আসা যাওয়া নির্ধারণ করা উচিত।

বাকিটা উপরে সূত্র ধরেই করতে হবে।

১। প্রকৃত চাহিদা নির্ধারণ
২। চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন ও আমদানি - রপ্তানির মাত্রা নির্ধারণ
৩। প্রতি বছরের আমদানি, রপ্তানি ও খুচরা বাজারে বিক্রির পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ।
৪। বিগত বছর গুলোর ডাটা এনালাইসিস করে ট্রেন্ড ও ফোরকাস্ট করা।
৫। দেশের বিভিন্ন বাজারে সকল পণ্য সঠিক সময়ে পৌছানোর লজিস্টিক প্লান করা।
৬। সাপ্লাই ও বিক্রির ট্রেন্ড দেখে খাদ্য গুদাম জাত করার প্লান।
৭। ফসল কাটা শুরু হওয়ার আগেই পরিমাণ নির্ধারণ করে বিক্রি, রপ্তানি ও গুদামজাত করণের প্লান।
৮। পচনশীল খাদ্য দ্রব্য সংরক্ষনের জন্য কৃষিপণ্য নির্ভর শিল্প গড়ে তোলা / কুটির শিল্প গড়ে তোলা।

পানির সমস্যা মিটানোর জন্য নতুন নতুন ওয়াটার ট্রিট্মেন্ট প্লানঃ

ঢাকা ওয়াসার মত দেশের ৬৪টা জেলায় পানি সরবরাহের জন্য বৃহৎ শিল্পের আকারে ওয়াটার ট্রিট্মেন্ট প্লান্ট গড়ে তোলা।