Thursday, March 24, 2011

আমি পেলাম! আমি ইহাকে পেলাম!

রুনার "সুখ তুমি কি বড় জানতে ইচ্ছে করে " আমার খুব প্রিয় একটা গান। কাল বিকেলে দেখি আব্বু ব্লগে পোস্ট লেখার জন্য খুব কসরৎ করছে। এই বয়সে নতুন করে কম্পিউটার, ই মেইল, ইন্টারনেট, ব্লগ - এসব শেখা যে কি বিরাট ঝক্কি সেইটা আমি আব্বু আম্মুকে শিখাতে গিয়ে টের পেয়েছি। নতুন নতুন টেকনোলজি শিখতে গিয়ে তাঁরা এখন নতুন শিশু আর আমি হয়েছি মা। :)

তো, আব্বু দেখি মহাবিরক্ত! কেন? 'হয়েছে' লিখতে গিয়ে 'য়'-কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কার এত্ত বড় সাহস যে বর্ণমালার 'য়' নিয়ে দিনে দুপুরে চম্পট দিলো! বহুত কষ্টে হাসি চেপে দেখিয়ে দিলাম। আব্বু আগে প্রায় ১০ বছর ধরে বিজয় আর বাংলা কি বোর্ড দিয়ে লিখে অভ্যস্ত। এখন আবার নতুন করে 'অভ্র' আর 'ফোনেটিক' শিখতে হচ্ছে। তো দেখিয়ে দেওয়ার পরে পুরো পাঁচ লাইন বানান করে করে লিখলেন। আর একটু পর পর "আরে! হয়ে গেলো তো!" , "এই তো পেয়েছি", "এইটাও তো হয়ে গেলো", "বাহ! পারছি তো!" - বলে বলে খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠলেন। বাচ্চাদের মতোই কি তার হাসি আর খুশি!

নিজের সমস্ত অতি জরুরী কাজ ফেলে, বসে বসে আব্বুর আনন্দ দেখলাম। পাঁচ লাইন লিখতে লাগলো প্রায় ২০ মিনিট। তারপরেও মনে হলো, সারাটা জীবন যাকে কিছু একটা দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতেই চলে গেলো, তাকে এইটুকু দিতে পেরে 'সুখ' পাখির একটা পালক হয়ত সত্যি সত্যি - "আমি পেলাম! আমি ইহাকে পেলাম!"

http://www.somewhereinblog.net/blog/valobashablog/29322391

অনিশ্চয়তা , আবার ও

সব কিছু কেমন যেন অদ্ভুত. কাজের চাপ এর কারণ তো আছেই. সেইসাথে নানা টেনশন যোগ হয়ে মনটা অস্থির হয়ে থাকছে. অনেক কিছু লিখতে মন চাই. কিন্তু সে সময় কই? এলোমেলো . সব কিছু এলোমেলো. মাঝে মাঝে মনে হয় , আমি আমার ক্যারিয়ার বেছে নিতে বেশ ভুল করেছি. আমার উচিত ছিল সাইকোলজি পড়া. মানুষের কথা শুনতে ভালো লাগে. মানুষের না না রকমের কষ্ট , দুঃখ , সমস্যা এর সমাধান করতে পারলে ভালো লাগে. এমন পেশা দুনিয়াতে নিশ্চয়ই আছে. আমি কেন খুঁজে . বুঝে , সাজিয়ে নিতে পারছি না?

Sunday, January 23, 2011

নতুন করে যুদ্ধ শুরু - নিজের সাথেই নিজে

একটা সময় থাকে, যখন স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। তবে, জীবনের একটা পর্যায়ে এসে উপলব্ধি করছি, স্বাস্থ্য শুধু সুখের মূলই নয়; স্বাস্থ্য , মানে সুস্বাস্থ্য, বেঁচে থাক্র জন্য অপরিহার্য্য। প্রথম যখন জন স্বাস্থ্য নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে শুরু করি, তখন আমার সুপারভাইজর শাহানা আপা বলেছিলেন," দেখো, আমরা যারা জনস্বাস্থ্যকে পেশা হিসেবে নিয়েছি, তাদের জন্য শরীরটাই সব। শরীর ঠিকাছে তো ক্যারিয়ার ঠিক, নইলে সব পন্ড।" আমার জন্য কথা গুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ কারণ খেলাধুলা ছেড়ে দিয়ে ডাক্তারী বিদ্যায় মননিবেশের সাইড ইফেক্ট হিসেবে তখন বেশ মুটিয়ে গিয়েছিলাম। সেই যে আমার উন্নতির শুরু, ওজনের কাঁটা ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখীই হয়েছে। তারপর অনেক প্রকার ডায়েট রেজিম, শরীর চর্চা, খেলায় ফিরতে গিয়ে বিশাল এক ইনজুরি, প্রায় এক বছর পঙ্গুত্বের অভিশাপ যাপন , তারপর স্রেফ মনের জোরে আবার নতুন করে হাঁটতে শেখা- বড় বিচিত্র গত ৫ বছরের পরিক্রমা।

গেলো সপ্তাহ থেকে নতুন করে শুরু করলাম ডায়েট। এর ভেতর, ২০০৮ এর পর বসে বসে কাজ করে ওজন বেড়েছে প্রচুর। তবে, সবটাই নেতিবাচক গল্প নয়। এর ভিতর নিজের শরীরকে চেনা হয়েছে। বিভিন্ন গবেষণা পড়া ও দেখা হয়েছে। ধীরে ধীরে বুঝতে শিখেছি যে " সব ডায়েট সবার জন্য নয়।" আবার , ডায়েটের সাথে কতটুকু ক্যালরি পোড়াতে হবে এবং সেইটা ঠিক কি ধরনের কসরতের মাধ্যমে, সেটাও এক এক জনের জন্য এক এক রকম। তাই সুস্বাস্থ্য পেতে সবার আগে চাই নিজের শরীরটাকে ভালো ভাবে চিনে নেওয়া। আমার জন্য শুরু ডায়েট বা শরীর চর্চা কাজ করবে না। দুটোর একটা ভারসাম্য ঠিক করে মেনে চলতে হবে সারা বছর- মানে বাকি জীবনের সবটাই।

এখন চলছে শুধু ডায়েট। মাস দুয়েক পর থেকে শুরু হবে শারীরিক কসরৎ। সপ্তাহে ৬ দিন শুধু সবজি আর সালাদ খাই। সাথে দই, ডাল, বাদাম আর মাছ। মাছ বেশির ভাগই সবজির সাথে মিশিয়ে। এর মধ্যে দু'দিন রাতের খাবারে যোগ হয় মাছ অথবা মুরগী (একদিন মাছ, একদিন মুরগী) আলাদা তরকারী হিসেবে। ৭ম দিন এক বেলা ভাত। ভাতের সাথে বাংলাদেশী তরকারির মত করে রান্না করা মুরগী বা মাছ। অন্যান্য দিন তেল ছাড়া রান্না করি, ছুটির দিনটা তেলসহ ভুনা হয়। সাথে নানা রকম ভর্তা। কোন কোন দিন সবজির স্যুপ থাকে। আর প্রতিদিন সকালে একটা রুটির সাথে একটা তেলবিহীন ডিম পোচ। তিন লিটার তরল পানের জন্য দিনমান ধরে চিনিবিহীন লিকার চা চলতে থাকে। সকালের চায়ে দু চামচ লেবুর রস আর মধু। ভালোই চলছে আমাদের সম্পূর্ণ সবুজ ডায়েট।

প্রায় ৩০ কেজি ওজন কমাতে হবে। মুখের কথা নয়। দেখা যাক কি হয়।